আজকের পোস্টটি ফ্রিলান্সিং এর ব্যাসিক কিছু বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করব। যেমন নতুনদের মধ্যে যে প্রশ্নগুলো হয়ে থাকে ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে করে? নতুনরা কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবে? ইত্যাদি ইত্যাদি এরকম বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব আজকের এই পোস্টে।
পোস্টটি করার পেছনে মূল কারন হচ্ছে যারা একেবারেই নতুন ফ্রীলান্সিং ইন্টারেস্টরেট হচ্ছেন তাদের মনে স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন রকম প্রশ্ন ঘুরপাক খায়। তাই আমি ভাবলাম এই নিয়ে একটি পোস্ট করে ফেলি। যারা এই বিষয়ে জানেন কিংবা যারা এক্সপার্ট তারা চাইলে এই পোস্টটি এভোয়েড করতে পারেন।
আমারা জারা নিউ beginner's তারা হয়তো ফ্রীলান্সিং জিনিসটাকে অনেক কঠিন মনে করি। কিন্তু আদৌ এটি তেমন কঠিন না। শুধু আপনাকে কিছু বিষয় জানতে হবে। কিছু বিষয় সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। এবং যে কোনো একটি বিষয়ের উপর আপনার স্কিল তৈরি করতে হবে। তাহলে চলুন চলে যাই মুল আলোচনায়।
ফ্রিল্যান্সিং কি
ফ্রীলান্সিং কি এটা যদি আমি আপনাকে সহজ ভাষায় বলি তাহলে ফ্রিল্যান্সিং অর্থ হচ্ছে মুক্ত পেশা।
অর্থাৎ ফ্রীলান্সিং হচ্ছে আপনি কারও অধীনে বা কোন কোম্পানির আন্ডারে কাজ না করে নিজের মত নিজের সময় অনুযায়ী কোন ক্লায়েন্টের কাজ করে দেওয়া এবং সেটা থেকে পেমেন্ট পাওয়া বা কোন মারকেটপ্লেস অধীনে কোন ক্লায়েন্টের কাজ করে দেওয়া এবং সেখান থেকে ইনকাম করাই ফ্রীলান্সিং।
যেমন ধরুন আমার একটি লোগো প্রয়োজন। কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি লোগো লাগবে। তো আমি গ্রাফিক ডিজাইনার না।সে ক্ষেত্রে আমাকে একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার খুঁজতে হবে।খোজার পর তাকে আমি অর্ডার করলাম এই এই রিকোয়ারমেন্টস এই এই টাইপের এমন একটি লোগো প্রয়োজনে।
তারপর সে যখন আমাকে লোগো ডিজাইন করে দিবে তখন এর বিনিময়ে আমি তাকে একটা পেমেন্ট দিলাম। এ প্রক্রিয়ারই হচ্ছে ফ্রীলান্সিং।
এই কাজগুলো করার জন্য অনেক ধরনের মারকেটপ্লেস রয়েছে। যেগুলোকে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে থাকে। fiverr.com upwork.com freelancer.com. এরকম আরো অনেক মার্কেটপ্লেস রয়েছে।
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে করে
আপনি একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ওই সকল মার্কেটপ্লেসে যখন একাউন্ট তৈরি করবেন । অ্যাকাউন্ট খোলার পরে আপনার প্রোফাইল টা কে আগে সাজাতে হবে। বা আপনার প্রোফাইল টাকে কমপ্লিট করতে হবে।
অর্থাৎ আপনার প্রোফাইলে আপনি যে কাজগুলো করতে এক্সপার্ট বা যে কাজগুলো গুলো আপনি জানেন, পারেন সেই বিষয়ে বিভিন্ন ইনফর্মেশন বা তথ্য দিতে হবে আপনার প্রোফাইলে।
যেমন ধরুন আপনি বা আমি ফেসবুকে যখন অ্যাকাউন্ট তৈরি করি তখন এবাউট(about) এ কিন্তু আমাদের নিজেদের সম্পর্কে বিভিন্ন ইনফর্মেশন দিতে লাগে। একইভাবে ওই সকল মার্কেটপ্লেসগুলোতে বিভিন্ন ধরনের ইনফরমেশন দিতে হবে।
যেমন ধরুন আপনি গ্রাফিক ডিজাইনার বা ওয়েব ডিজাইনার অথবা ডিজিটাল মার্কেটার। আপনি যেটা এক্সপোর্ট ওই ক্যাটাগরি গুলোতে বিভিন্ন রকম ইনফরমেশন দিয়ে আপনাকে গিগ তৈরি করতে হবে।
যখন কোন ক্লায়েন্ট এ সকল মার্কেটপ্লেসগুলোতে গিয়ে গ্রাফিক ডিজাইনার বা লোগো ডিজাইনার খুঁজেবে। তখন কিন্তু সে অনেক গ্রাফিক ডিজাইনার বা লোগো ডিজাইনার পাবে। তাদের মধ্যে যার প্রোফাইলটা ওই ক্লায়েন্ট এর ভালো লাগবে, যার এক্সপেরিয়েন্স ভালো লাগবে তাকেই কিন্তু ক্লায়েন্ট কাজটি দিবে।
তারপর সে যখন কাজটি কমপ্লিট করে দিবে তখন কিন্তু এর বিনিময়ে সে একটা পেমেন্ট পাবে। এই টোটাল প্রসেস টাই ফ্রীলান্সিং।
নতুনরা কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করবে
এখন প্রশ্ন হচ্ছে নতুনরা কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারে বা কোন সেক্টরে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করবে। স্বাভাবিক ভাবে নতুন দের কাছে এই প্রশ্নটা হয়ে থাকে।
এটা আসলে নির্দিষ্ট কোনো কাজ বা নির্দিষ্ট কোন টপিক নেই যে আপনাকে ওইটাই শিখতে হবে বা এর বাইরে কোন কিছু করা যাবে না। ফ্রীলান্সিং মানেই হচ্ছে মুক্ত পেশা আপনি যেটাতে এক্সপার্ট বা আপনার যেটা ভালো লাগে সেই কাজটা করেই আপনি ইনকাম করতে পারবেন।
ধরুন আপনি গ্রাফিক ডিজাইন পারেন। আপনি ফটোশপ,ইলাস্ট্রেটর এই ধরনের সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করতে জানেন। তখন আপনি গ্রাফিক্স রিলেটেড কাজগুলো করবেন না।
আবার আপনি ওয়েব ডিজাইনার, ওয়েবসাইট বানাতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনি একজন ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে গিয়ে কাজ করতে পারেন।
অথবা আপনি ভালো ভালো আর্টিকেল লিখতে পারেন। সে ক্ষেত্রে একজন আর্টিকেল রাইটার হিসেবে মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে পারেন।
এই টাইপের আরো যত রকমের কাজ আছে এসইও, ডিজিটাল মার্কেটিং, আর্ট, ভিডিও এডিটিং ইত্যাদি ইত্যাদি কাজ আপনি মার্কেটপ্লেসগুলোতে করতে পারে না। এক কথায় আপনার যেটার স্কিল আছে সেই স্কিলটা কে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে কাজ করে ইনকাম করতে পারবেন।
সবার জন্য কি ফ্রিল্যান্সিং
নতুনদের মনে প্রশ্ন থেকে থাকে যে যে কেউ কি ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করতে পারবে। উত্তর হচ্ছে হ্যাঁ। যে কেউ ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবে তবে অবশ্যই তার একটা স্কিল থাকতে হবে। আপনি যদি কোন স্কিল না থাকে সেক্ষেত্রে আপনার জন্য ফ্রিল্যান্সিং না।
আপনাকে ফ্রিল্যান্সার হওয়ার আগে অবশ্যই যেকোনো একটি কাজের উপর স্কিল তৈরি করতে হবে। যখন আপনার স্কিল থাকবে তখন আপনি সব জায়গায় কাজ করতে পারবেন।
আবার সবার জন্যও ফ্রিল্যান্সিং না। করান, ধরুন আপনি গ্রাফিক ডিজাইনার। ফটোশপের শুধু কয়েকটা কাজ জানেন এগুলো জানার পরে আপনি মনে করতেছেন আপনি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার।
তারপর মার্কেটপ্লেসে গিয়ে কাজ করার জন্য ট্রাই করতেছেন তখন কোন ক্লায়েন্টের সাথে মিট করার পরে যখন ক্লাইন্টকে সেক্রিফাইস করতে পারবেন না বা ক্লাইন্ট এর আশানুরূপ কাজ করে দিতে পারবেন না। তখন কিন্তু সে আপনাকে একটা খারাপ ফিডব্যাক দিবে। ফলে সহজেই আপনি আর কাজ পাবেন না। এরকম স্কিনে যদি আপনি মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে জানো তাহলে আপনার সফল হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৯৯% কমে যাবে।
সেই সাথে ক্লায়েন্ট কিন্তু দেখবে আপনি কোন দেশে ফ্রিল্যান্সার। যখন দেখবে বাংলাদেশের তখন কিন্তু আপনার জন্য বাংলাদেশের অন্যান্য ফ্রিল্যান্সার দেরও নেগেটিভ ভাবে নিবে যে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা খুব খুব বেশি এক্সপার্ট না। তখন সে অন্য দেশে কনভার্ট হয়ে যাবে।
এই রকম আরো অনেক ধরনের সমস্যা থাকে। যার কারণে অন্যান্য যারা ফ্রিল্যান্স আছে যারা এক্সপার্ট তাদের কিছু প্রবলেম ফেস করতে হয়।
তাই নতুনদের জন্য সাজেশন এইটাই মার্কেটপ্লেসে কাজ করার আগে নিজেকে আগে এক্সপার্ট করে তুলুন নিজের স্কিল ডেভেলপ করুন তারপরই মার্কেটপ্লেসগুলোতে গিয়ে ট্রাই করুন। দেখবেন অবশ্যই সফল হবেন।