মানুষের মন জয় করার সহজ উপায় |
মানুষের মন জয় করার সহজ উপায়
মানুষের মন জয় করার উপায়। কিভাবে খুব সহজে মানুষের মন জয় করবেন?
পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষই আলাদা। তা সত্ত্বেও মনোবিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখেছেন। শৈশব থেকে এমন কিছু বিশ্বাস আমাদের মধ্যে তৈরি হয়ে যায়, যা প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রে প্রায় একই রকম কাজ করে।
আপনি কি চান? সবাই আপনার কথা মন দিয়ে শুনুক বা আপনাকে সম্মান করুক?তাহলে আমাদের আজকের মানুষের মন জয় করার উপায় আর্টিকেলে আপনার জন্য এমন কিছু কৌশল আছে যেগুলো আপনার যোগাযোগের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আপনার জীবনকে সহজ করে দিবে।
কিভাবে বুঝবেন কেউ আপনাকে পছন্দ করে কিনা?
এটা বুঝা খুবই সহজ আপনার আশেপাশের মানুষগুলোর কথা খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখবেন আলাদা আলাদা ভাবে প্রত্যেকেই কিছু শব্দের প্রতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট। তারা কথা বলার সময় এই শব্দগুলো ঘনঘন ব্যবহার করে। হাসে বা মাথা নাড়ে।
যে মানুষটির মনের কথা আপনি পড়ে ফেলতে চান সর্বপ্রথম তার ঘনঘন ব্যবহার করা শব্দটি খুজে বের করুন। ব্যাস আপনার কাজ হয়ে গেছে। মানুষের মন জয় করার উপায়।এবার তার সাথে আপনি যখন কথা বলছেন লক্ষ্য করুন আপনার সাথে কথা বলার সময় সেই শব্দটি খুব বেশি ব্যবহার করছে কিনা। উত্তর যদি হ্যাঁ হয় তাহলে আপনি বিজয়ীর হাসি হাসতে পারেন আর না হলে বুঝে নিন এখনো তার মন জয় করার অনেক বাকি।
আরো পড়ুন
কিভাবে কথা সাথে সবার সম্মতি আদায় করবেন?
গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বলার সময় মাথা সামান্য ঝাঁকিয়ে কথা বলুন শ্রোতার সাথে দৃষ্টি সংযত রাখার চেষ্টা করুন। এক্ষেত্রে মাথা ঝাকিয়ে কথা বলার অর্থ হলো নিজের অভিজ্ঞতা থেকে আপনি কথাগুলো বলছেন। আর যার সাথে কথা বলছেন সেও দেখবেন মাথা ঝাকিয়ে আপনার কথা বলার রেসপন্স করছে।
কোন গানের লাইন কিছুতেই মাথা থেকে সরাতে পাচ্ছেন না?
দারুন এই সাইকোলজিকাল কৌশল খাটিয়ে দেখতে পারেন যদি আপনি কোন একটি নির্দিষ্ট গানের মোহ তেকে বের হতে চান তাহলে গানের একেবারে শেষ অংশটুকু মনে রাখার চেষ্টা করুন। মনোবিজ্ঞানের ভাষায় অসমাপ্ত রাখা কাজগুলো আমাদের মস্তিষ্ক ভালোভাবে মনে রাখতে চেষ্টা করে। আপনি যখন গানের শেষ টুকু মনে রাখবেন তারমানে আপনি গানটি শেষ করেছেন। সুতরাং মস্তিষ্ক গানটিকে মনে রাখতে ততটা গুরুত্ব দিবে না। অর্থাৎ গানটি মাথা থেকে সরিয়ে ফেলা আপনার জন্য খুবই সহজ হবে।
কেউ আপনার দিকে কেমন কেমন করে যেন তাকাচ্ছে তাইতো?
কারো সন্দেহের চোখে পড়া একটি অসহনীয় ব্যাপার। তাহলে চলুন এর থেকে বের হওয়ার কোনো সহজ উপায় বের করা যায় কিনা।
রাস্তাঘাটে বা অন্যান্য কোন জায়গায় কেউ যদি আপনার দিকে দৃষ্টিকটু ভাবে তাকিয়ে থাকে তাহলে আপনি তার দিকে তাকিয়ে হাই তুলুন। আপনি হয়তো জানেনই না হাই তোলা একটি সংক্রামক অভ্যাস। সুতরাং অভ্যাসবশত উনি নিজেও হাই তুলবেন এবং তাতে আপনার প্রতি তার মনোযোগ বিঘ্নিত হবে।
কিভাবে প্রথম পরিচয় তার মন জয় করবেন?
ব্যবসায়িক কার্যক্রম কিংবা কর্ম ক্ষেত্রে এটি খুব কাজে আসতে পারে। এর জন্য প্রথম পরিচয় হাত মেলানো ইতিবাচক একটি কাজ। কারো সাথে হাত মেলানোর আগে দেখে নিন আপনার হাতের যথেষ্ট গরম আছে কিনা। কারণ উষ্ণ হাত একটি বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করে। যেখানে ঠাণ্ডা হাত ঠিক এর বিপরীত ভাবে কাজ করে।
কেউ আপনার কোথায় গুরুত্ব দেয় না?
চিন্তার কিছু নেই পরীক্ষা করে দেখতে পারেন এই টিপসটি। খুব মজার এবং ছেলেমানুষি পূর্ণ তবে স্থান পাত্র বুজে ব্যাবহার করবেন।
আপনার কথায় অন্যদের গুরুত্ব বাড়াতে জন্য বলতে পারেন যে, এই কথা শুনেছেন আপনার বাবা বা মায়ের কাছে। কারণ বাবা-মায়ের দেয়া পরামর্শ সব সময় বিশেষ গুরুত্ব পায়। তবে কোন কোথায় বাবা মার রেফারেন্স ব্যাবহার করছেন সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
ধরুন আমার এক বন্ধু আপনাকে জিজ্ঞেস করল কিরে কেমন আছিস? এর উত্তর ভুলেও বলতে যাবেন না যে, বাবা বলেছে -ভালো আছি।
কিভাবে খুব ভালো একজন শ্রোতা হয়ে উঠবেন?
পাশের মানুষটি যখন কোন অনুভূতির কথা আপনাকে বলবে তখন সেটা পুনরাবৃত্তি করুন এবং সেটার যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা প্রদান করুন। যেমন ধরুন আপনার বন্ধু বলল যে আজকের বিকেলটা অনেক সুন্দর আপনি যদি তার কথার পুনরাবৃত্তি করে বলেন যে ঠিকই বলেছ আসলে আজকের বিকেলটা খুব সুন্দর। তখন তিনি অবচেতনভাবে অনুভব করবেন যে আপনি একজন ভালো শ্রোতা।
কিভাবে কারো কাছ থেকে সাহায্য নিবেন?
কি আপনাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসুক এমনটা যদি চান তাহলে তাকে সরাসরি জানান যে আপনার সাহায্য দরকার। সভাপতি মানুষ নিজেকে অপরাধী ভাবতে পছন্দ করে না তাই তারা আপনাকে সাহায্য করতে অস্বীকার করতে পারবে না।
অপছন্দের তালিকা থেকে নিজেকে কিভাবে কারো পছন্দের তালিকায় নিয়ে যাবেন ?
আপনার পরিচিত তালিকা সবাই আপনাকে পছন্দ করবে ব্যাপারটা কিন্তু এমনটা নয়। আবার অনেক সময় দেখা যায় যে ভুল বোঝাবুঝির কারণেও অনেক সময় আপনার প্রতি কারণ ইতিবাচক ভাবনা তৈরি হলো।
এখন অকারণে আপনাকে কেউ অপছন্দ করুক। এটা অবশ্যই আপনি চাইবেন না। এই টানাপড়োনের চিন্তাভাবনাকে পাল্টাতে চাইলে আপনাকে কিছু কৌশল মাথায় রেখে সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
আপনি তাদের সাথে একটু একটু করে সৌজন্যমূলক কথাবার্তা চালিয়ে যেতে পারেন। তবে আরো ভালো হয় যদি আপনি তার কাছ থেকে এমন কিছু ধার করতে পারেন যা ফেরত যোগ্য। হতে পারে এটা একটা কলম বা বই বা অন্য কিছু।
সাধারণত মানুষ যাকে অপছন্দ করে তাকে সহজে সাহায্য করে না। কিন্তু ছোট্ট কোন সাহায্যের ক্ষেত্রে সহজে না বলতে পারে না। আপনার ভদ্রতা শ্রদ্ধাবোধ আস্তে আস্তে তাদের ভাবনা গুলোকে বদলে দিতে শুরু করবে। সবশেষে তাদের ভুলভ্রান্তির অবসান ঘটিয়ে তাদেরও অপছন্দের তালিকা থেকে পছন্দের তালিকায় চলে আসবেন।
অবশ্যই পরবেন
অজানা বিষয়ের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বরাবরই রয়েছে। আর তাই কিছুটা ধোঁয়াশা অনেক সময় আকর্ষণ বাড়িয়ে দেয়।
আপনি যদি প্রাণী পুষতে ভালোবাসেন তাহলে তা অন্যদেরও আপনার প্রতি ভালোবাসা তৈরি করবে। গবেষকরা বলছেন, এ বিষয়টি মূলত মানুষের নির্ভরযোগ্যতার প্রমাণ। যে একটি প্রাণীকে ভালোবাসে এবং তার সব দেখাশোনা করতে পারে সে অন্য মানুষের কাছে নির্ভরযোগ্য হিসেবে দেখা দেয়।
একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে মিল থাকলে তা সহজেই অন্যকে আকর্ষণ করে। তাই আপনার সঙ্গে কারো যদি দারুণ মিল থাকে তাহলে সেও আপনাকে পছন্দ করতে পারে। দুজন ব্যক্তির মাঝে যদি একই ধরনের মূল্যবোধ কাজ করে তাহলে তাদের আকর্ষণ বেড়ে যায়।
আশাকরি আমাদের এই টিপস গুলো আপনাদের ভাল লেগেছে। এবং এগুলোর যদি সঠিক প্রয়োগ করেন বাস্তব জীবনে তাহলে ইনশাল্লাহ আপনার উদ্দেশ্য সফল হবে। তবে হ্যাঁ সবার যে এই টিপসগুলো কাজে দিবে সেটা কিন্তু নয়। তাই অবশ্যই মন জয় করার জন্য উক্ত টিপসগুলো উপযুক্ত পরিবেশ প্রয়োগ করবেন।