most 7 mistakes for new bloggers |
নতুন ব্লগার যে সাতটি ভুল করে থাকে।
ব্লগিং হচ্ছে মূলত একটি লেখালেখির করার পেশা।আপনার যদি লেখালেখি করতে ভালো লাগে তাহলে আপনি ব্লগিং ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে পারেন। কিন্তু প্রায় 90 শতাংশ ব্লগার তাদের ব্লগিং ক্যারিয়ারের সফল হতে পারেনা কিছু কমন মিসটেক করার কারণে।
তেমনি আজকে আপনাদের সাথে আমি 7 টি কমন মিস্টেক নিয়ে কথা বলবো। এই মিস্টেক অ্যাভয়েড করলে আপনি আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ারে ভালো ভালো কিছু করতে পারবেন।
তাহলে চলুন শুরু করা যাক। প্রথমেই দেখে নেই
কি কি সেই 7 টি মিসটেক।
ব্লগিং শুরু করার প্রথম থেকেই আয় করার চিন্তাভাবনা।
অতিরিক্ত অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ যুক্ত হওয়া
কনটেন্ট ছাড়া অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ এপ্লাই করা
আফিলিয়েট লিংক যেখানে সেখানে কপি পেস্ট করা
মার্কেটপ্লেস এর লিংক নিয়ে সরাসরি পেস্ট প্রমোশন করা
ওয়েবসাইট ট্রাফিক দের এনালাইসিস না করা।
কনটেন্ট এর ভিতরে অতিরিক্ত অ্যাডভার্টাইজমেন্ট দেখানো।
ব্লগিং শুরু করার প্রথম থেকে আয় করার চিন্তাভাবনা করা
নতুন ব্লগার সবচেয়ে এই ভুলটা বেশি করে থাকেন। তারা ব্লগিং এর শুরু থেকেই আয় করার চিন্তাভাবনা করে। দেখুন আমরা যদি ভালো একটি জব নিতে যাই সে ক্ষেত্রে আমাদের 20 25 বছর পড়ালেখা করতে হয়। তারপর আমরা একটি ভালো জবের আশা করতে পারি।
ঠিক ব্লগিংও তেমন। আপনি যদি প্রথম থেকে আয় করার চিন্তা করেন তাহলে কিন্তু সফল হতে পারবেন না। আপনাকে প্রতিনিয়ত আপনার টপিকের উপর কনটেন্ট পাবলিস্ট করে যেতে হবে। তারপর একটা সময় আপনার ওয়েব সাইট থেকে আয় করা শুরু হবে।
আপনারা অনেক ওয়েব সাইটে ভিজিট করে থাকেন। সেখানে লক্ষ্য করে দেখবেন আশেপাশে গুগল এডসেন্স সহ বিভিন্ন কোম্পানির এডভের্টাইসমেন্ট প্রকাশ করা হয়। যেখান থেকে মূলত ওই ওয়েবসাইটের আয় হতে থাকে।
তারা সেগুলোই একদিনের ডেভলপ করেনি।প্রতিনিয়ত তারা বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট পাবলিশ করতে করতে একটা সময় তাদের ওয়েবসাইটে ভিজিটর বা ট্রাফিক আসতে শুরু করেছে। এবং তারা সেখান থেকে আয় করা শুরু করেছে।
তাই আপনার ব্লগে আপনাকে নিয়মিতভাবে কনটেন্ট পাবলিস্ট করে যেতে হবে। এবং সাথে ধৈর্য রাখতে হবে।
অতিরিক্ত অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ যোগ হওয়া: অনেকেই এই ভুলটা করে থাকে। শুরুতেই তারা অনেক ধরনের অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম জয়েন করে। আপনার ব্লগের যে বিষয় শুধুমাত্র সেই বিষয়ে রিলেটেড ভালো ভালো দু-একটা মার্কেটপ্লেসে জয়েন করবেন। আপনি আপনার একটি ওয়েবসাইট দিয়ে একাধিক কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট যুক্ত হতে পারবেন তাতে কোন সমস্যা নেই। সবচেয়ে বড় বড় মার্কেটপ্লেস গুলো হচ্ছে অ্যামাজন গ্রীন ফরেস্ট আলীএক্সপ্রেস এই ধরনের।তাছাড়া আরও লক্ষ লক্ষ কোম্পানি আছে যারা অ্যাফিলিয়েট পার্টনার নিয়ে থাকে। কিন্তু আপনার ব্লগের বিষয়ে রিলেটেড সর্বোচ্চ দুই তিনটা অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ আপনি জয়েন করবেন।
অতিরিক্ত এফিলিয়েট মার্কেটিং এর যোগ না করে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে ভালো দেখে দুই একটি আফিলিয়েট মার্কেটিং যোগ করলেই অনেক ভাল প্রফিট পাবেন।
কনটেন্ট সারা এফিলিয়েট প্রোগ্রাম এর জন্য আবেদন করা
অনেকেই কোন কন্টাক্ট ছাড়াই অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ এপ্লাই করে। যার ফলে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে তারা রিজেক্ট হয়ে যায়। কোন কোম্পানি অ্যাফিলিয়েট পার্টনার নেওয়ার পূর্বে তারা আপনার ওয়েবসাইট রিভিউ করবে। দেখবে যে আপনার ওয়েবসাইটে আপনি কি ধরনের কনটেন্ট বা আর্টিকেল পাবলিস্ট করছেন।
আপনার ওয়েবসাইটে যদি ভাল মানের কনটেন্ট থাকে তাহলে সেগুলো রিভিউ করার পরেই তারা অ্যাকাউন্ট অ্যাপ্রুভ করে দেয়। অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ জয়েন করার পূর্বে আপনার ওয়েবসাইটে আপনি অবশ্যই আগে আর্টিকেল পাবলিস্ট করে নিবেন। নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা নেই যে আপনি কতগুলো আর্টিকেল প্রকাশ করার পর এপ্লাই করবেন।
আবারো বলছি ব্লগিং হচ্ছে একটি লেখালেখির প্রফেশন। আপনকে নিয়মিত ভাবে লিখতে হবে ।যদি আপনার অ্যাফিলিয়েট একাউন্ট এপ্রুভ করা মূল উদ্দেশ্য হয় বা গুগল এডসেন্স অ্যাপ্রুভ পাওয়াই যদি মূল উদ্দেশ্য থাকে তাহলে ব্লগিংয়ে আপনি ভালো কিছু একটা করতে পারবেন না।
কোম্পানিগুলো বসে আছে আপনাকে গুগল এডসেন্স দেওয়ার জন্য। আফিলিয়েট পার্টনারশিপ দেওয়ার জন্য। আপনাকে শুধু ভালো কোয়ালিটির কনটেন্ট নিয়মিতভাবে আপনার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
তাই এটা অবশ্যই মাথায় রাখবেন আপনার ওয়েবসাইটে আগে আপনি কন্টেন্ট বা আর্টিকেল প্রকাশ করে নিবেন। আপনি যদি নিয়মিতভাবে কনটেন্ট পাবলিশ করতে থাকেন পরবর্তীতে কিন্তু অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বা এডসেন্স অ্যাপ্রভাল পাওয়ার জন্য অনেক সহজ হবে। তাই এই মিসটেক টি আপনি অবশ্যই এভোয়েড করবেন।
এফিলিয়েট লিংক যেখানে সেখানে কপি পেস্ট করা
নতুনরা এই ভুলটি করে থাকে। তারা বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলের কমেন্ট বক্সে পেস্ট করে দেয় তার এফিলিয়েট লিংক টি। আবার কেউ কেউ ফেসবুকের কমেন্ট বক্সে আবার কেউ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে পেস্ট করে দেয়।
এগুলোকে সাধারণত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলা হয় না। এগুলোকে বলা হয় স্পামিং। আর এই স্পামিং করার কারণে অনেকের এ্যাকাউন্ট রিজেক্টেড হয়ে যায়। তাই এই স্পামিং থেকে আপনি অবশ্যই বিরত থাকবেন। যেখানে সেখানে এফিলিয়েট লিংক কপি পেস্ট করবেন না।
এভাবে আপনি কখনো এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে ভালো কিছু করতে পারবেন না। আপনি কনটেন্ট বা আর্টিকেল লেখার মাধ্যমে সেখানে এফিলিয়েট লিংক দিন।কিন্তু কারো কমেন্ট বক্সে কারো ভিডিও নিচে গিয়ে লিংক পোস্ট করবেন না ।
মার্কেটপ্লেস এর লিংক নিয়ে সরাসরি পেজ প্রমোট করা
এই ভুলটা আপনি কখনোই করবেন না। বিভিন্ন ধরনের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটপ্লেস যেমন আলীএক্সপ্রেস অ্যামাজন থিমফরেস্ট ইত্যাদি বড় বড় মার্কেট প্লেস তাদের মার্কেটপ্লেস এর লিংক ফেসবুকের মাধ্যমে বুস্ট করে দিলেন অ্যাড ওয়াল্ড এর মাধ্যমে পোস্ট করে দিলেন। এতে করে আপনার অ্যাকাউন্টটি সাসপেন্ড হয়ে যাবে।
আপনার ওয়েবসাইটে আপনি কন্টেন্ট লিখতে পারেন। এবং সেখানে আপনি এফিলিয়েট লিংক দিয়ে দিতে পারেন। এবং আপনার ওয়েবসাইটের লিঙ্ক এ আপনি বুস্ট করতে পারেন তাতে কোন সমস্যা নেই।
কিন্তু ডিরেক্টলি আমাজেন লিংক বা থিমফরেস্টের লিংক আপনি যদি ফেসবুকে বুস্ট করে দেন গুগোল অ্যাড ওয়াডের বুস্ট করে দেন তাহলে আপনার একাউন্ট সাসপেন্ড হয়ে যাবে। এই কোম্পানিগুলো এগুলো অ্যালাও করেনা। তাই আপনাকে অবশ্যই মার্কেটপ্লেসের লিংক সরাসরি পেট প্রমোশন থেকে বিরত থাকতে হবে।
ওয়েবসাইট ট্রাফিক দের এনালাইসিস না করা:ওয়েবসাইটে যখন ট্রাফিক ভিজিটর আসতে শুরু করবে। আপনি অবশ্যই আপনার ট্রাফিক ভিজিটর দের ডাটা এনালাইসিস করবেন।
যেমন ধরুন ভিজিটরদের বয়স কত কি পরিমান ছেলেরা ভিজিট করতেছে কি পরিমান মেয়েরা ভিজিট করতে। কোন কোন দেশ থেকে ভিজিট করতেছে। এগুলো আপনাকে এনালাইসিস করতে হবে।
যেন এই ইনফর্মেশন গুলোর উপর ভিত্তি করে আপনি পরবর্তী কন্টাক্ট লিখতে পারেন। ডাটা এনালাইসিস করার সবচেয়ে বেস্ট টুল হচ্ছে গুগল এনালাইটিক্স। এটি গুগলের একটি সম্পুর্ন ফ্রী এনালাইটিক্স টুল।
আপনার ওয়েবসাইটের সাথে আপনি গুগল এনালাইটিক্স কানেক্ট করলেই আপনার ওয়েব সাইটে কি ধরনের ভিজিটর আসতেছে। তাদের বয়স কত তারা কোন ধরনের ডিভাইস ব্যবহার করে। স্মার্টফোন ডেক্সটপ নাকি ল্যাপটপ ছেলেদের পরিমাণ কত মেয়েদের পরিমাণ কত এ ধরনের সমস্ত ডাটা গুলো আপনি আপনার ওই এনালাইটিক্স ড্যাশবোর্ডে পেয়ে যাবেন।
এবং এই ডাটা গুলো একটু মনোযোগ দিয়ে এনালাইসিস করলে আপনি পরবর্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন যে পরবর্তী কনটেন্টগুলো কোন বিষয়ের উপর লিখলে ভালো হবে।
প্রথমে আপনি যদি বুঝতে না পারেন। যখন আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর ট্রাফিক আসতে শুরু করবে তখন আপনি এমনিতেই বুঝে যাবেন।
কনটেন্ট এর ভিতরে অতিরিক্ত অ্যাডভার্টাইজমেন্ট দেখানো
অনেক ওয়েবসাইট আছে আপনি ভিজিট করলে দেখবেন চারদিকে শুধু অ্যাডভার্টাইজমেন্ট আর অ্যাডভার্টাইজমেন্ট। একটাতে ক্লিক করলে আরেকটা ওপেন হয়ে যায়। এগুলো খুবই বিরক্তিকর বিষয়।
তাই এই ধরনের অধিক পরিমাণ ব্যানার বা এড ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন। কারণ কেউ অ্যাডভার্টাইজমেন্ট পছন্দ করেনা। আপনার কথা চিন্তা করুন আপনি কিন্তু অ্যাডভার্টাইজমেন্ট দেখার জন্য কোন কনটেন্ট পড়েন না।
এডভারটাইসমেন্ট আমরা কেউই পছন্দ করিনা
কিন্তু এডভারটাইজমেন্ট দেখতে হয় তবে সেটা লিমিট থাকা উচিত। অতিরিক্ত হলে এটা কারো ভালো লাগবে না। তাই আপনার কনটেন্ট ও অতিরিক্ত অ্যাডভার্টাইজমেন্ট যোগ করবেন না। গুগল এডসেন্স এর রুলস অনুযায়ী আপনি একটি পেজের সর্বোচ্চ তিনটি এডসেন্স ব্যানার ব্যবহার করতে পারবেন। তিনটির বেশি করা যাবে না এতে পলিসি ব্রেক হবে একাউন্ট ব্যান হওয়ার চান্স থাকবে।
আপনার ট্রাফিক বা ভিজিটররা আপনার ওয়েব সাইটের কনটেন্ট পড়ার জন্য আসবে এড দেখার জন্য কিন্তু না। তাই অতিরিক্ত লাভের আশায় চারিদিকে শুধু অ্যাডভার্টাইজমেন্ট বসিয়ে দিলেন এতে আপনার ভিজিটররা বিরক্তি হবে এবং আপনার ওয়েবসাইটে দ্বিতীয়বার আর ভিজিট করতে চাইবে না। তাই অবশ্যই এটি এভয়েড করে চলবেন।
বন্ধুরা এই ছিল নতুন ব্লগারদের কয়েকটি কমন ভুল। যেটা প্রায় অনেকেই করে থাকে। আশা করছি এই ভুল গুলো আপনি অবশ্যই অ্যাভয়েড করবেন। আপনার নিজের লাভের জন্য এই ভুলগুলো যদি আপনি করে থাকেন তাহলে কিন্তু ব্লগিং ক্যারিয়ারে দীর্ঘস্থায়ী এবং সফল হতে পারবেন না।
আরো পড়ুন
আশা করি আপনারা বুঝতে পারছেন। তবুও যদি কারো কিছু বলার থাকে বা কথা বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন। আর যদি আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।